• 05 Oct, 2024

ঠাকুরগাঁওয়ে বিকল পড়ে আছে রক্ত পরীক্ষার মেশিন, বিড়ম্বনায় রোগীরা

ঠাকুরগাঁওয়ে বিকল পড়ে আছে রক্ত পরীক্ষার মেশিন, বিড়ম্বনায় রোগীরা

রক্ত পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক উপাদান (রিএজেন্ট) না থাকায় গত এক বছর ধ‌রে কা‌জে আস‌ছে না ঠাকুরগাঁও জেনা‌রেল হাসপাতা‌লের হেমাটোলজি অ্যানালাইজার মে‌শিন। এ‌তে নির্ভুল রি‌পোর্ট পে‌তে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাক‌তে হয় রোগী‌দের। ফ‌লে প্রতিদিন শত শত রোগী বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।

সেবা প্রত্যাশীরা বলছেন, চি‌কিৎসক দে‌খি‌য়ে টেস্ট কর‌তে সময় পে‌রি‌য়ে গে‌লে পরে চি‌কিৎসক‌ দেখা‌তে বেগ পে‌তে হয়। কারণ নি‌র্দিষ্ট সময়ে‌র পর ব‌র্হিবিভা‌গের চি‌কিৎসক উ‌ঠে যায় চেম্বার থে‌কে। এতে একদিকে যেমন সময় ব্যয় হচ্ছে, অন্যদিকে বেড়েছে ভোগান্তি। কোনো কোনো ক্ষে‌ত্রে এক‌দিন প‌র চি‌কিৎসক দেখা‌তে হয়।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, দ্রুত সম‌য়ে নির্ভুল ও নিখুঁতভাবে রক্ত পরীক্ষা শনাক্তকরণের জন্য ২০২৩ সা‌লের মা‌র্চে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি) থে‌কে ঠাকুরগাঁও জেনা‌রেল হাসপাতাল‌কে এক‌টি হেমাটোলজি অ্যানালাইজার মে‌শিন হস্তান্তর করা হয়। হস্তান্তরের এক মাস প‌রে যন্ত্র‌টির প্রয়োজনীয় রাসায়নিক উপাদান (রিএজেন্ট) সঙ্কট দেখা দেয়। কিন্তু প্রায় ১ বছর গেলেও যন্ত্রটি রিএজেন্ট সরবরাহ করে‌নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফ‌লে রিএজেন্ট না থাকায় সচল যন্ত্র‌টি রোগী‌দের কোনো কা‌জেই আস‌ছে না। 

বৃহস্প‌তিবার হাসপাতা‌লে গি‌য়ে দেখা যায়, প্যাথলজি বিভাগের সামনে রোগীদের ভিড়। আশরাফুল না‌মে এক ব্যক্তি ব‌লেন, ভিড়ের কারণে সকাল ১০টায় টিকিট কেটে লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর পৌনে ১টায় ডাক্তারের কক্ষে ঢোকার সুযোগ পেয়েছি। চি‌কিৎসক রক্ত পরীক্ষা দি‌য়ে‌ছে। পরীক্ষার পর ডাক্তার দেখা‌তে পার‌বে কী না এ নি‌য়ে চি‌ন্তিত।

আসমা বেগম না‌মে এক রোগীর স্বজন ব‌লেন, মা‌কে ডাক্তার দে‌খি‌য়ে রক্ত পরীক্ষা ক‌রি‌য়ে‌ছি। দুই ঘন্টা পর এখন রিপোর্ট দি‌চ্ছে। আরও দ্রুত সম‌য়ে রি‌পোর্ট দি‌লে চি‌কিৎসককে স‌ঠিক সম‌য়ে দেখানো যে‌তো।

হাসপাতা‌লের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ল্যাব (ইনচার্জ) ফ‌নিন্দ্রনাথ মন্ডল ব‌লেন, যেখা‌নে টেকনোলজিস্টদের হা‌তে পরীক্ষা কর‌তে সময় লা‌গে ১ ঘণ্টার মতো সেখা‌নে মাত্র ২‌ মি‌নি‌টে হেমাটোলজি অ্যানালাইজার মে‌শিন দ্বারা শতভাগ নিখুঁত রিপোর্ট দেওয়া যায়। এছাড়া হা‌তের পরীক্ষায় ৮০-৯০ ভাগ নির্ভুল হওয়ার সম্ভবনা থা‌কে। প্রতি‌দিন গ‌ড়ে এ মে‌শি‌নে ১ হাজার রোগীর রক্ত পরীক্ষা করা সম্ভব। ত‌বে রিএজেন্টের অভা‌বে এ‌টি চালু করা যা‌চ্ছে না। প্যাথলজি বিভাগে স্থাপ‌নের ১ মাস পর এ‌টি বন্ধ হ‌য়ে যায়।

এ বিষ‌য়ে‌ ঠাকুরগাঁও জেনা‌রেল হাসপাতা‌লের তত্ত্বাবধায়ক সিরাজুল ইসলাম ব‌লেন,‌ টেন্ডার দেওয়া হ‌য়ে‌ছে রিএ‌জেন্ট পে‌লে মে‌শিন‌টি আবার চালু হ‌বে। গুরুত্বপূর্ণ এই মেশিনটি গত এক বছর ধরে পড়েছিল এর মধ্যে রিয়েজেন্ট কেনা হয়নি কেন? জান‌তে চাই‌লে তত্ত্বাবধায়ক ব‌লেন, হাসপাতা‌লে যোগদা‌নের তিন মাস হ‌য়ে‌ছে। এর ম‌ধ্যে রিএ‌জেন্টের জন্য টেন্ডার সাব‌মিট ক‌রে‌ছি।
আ‌গে কেনও কেনা হয়‌নি এ‌ বিষ‌য়ে আ‌মি বল‌তে পার‌বে না।