• 06 May, 2024

নড়াইল জেলা কালচারাল অফিসারের স্বেচ্ছাচারিত ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত শুরু

নড়াইল জেলা কালচারাল অফিসারের স্বেচ্ছাচারিত ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত শুরু

নড়াইল জেলা কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমানের বিরুদ্ধে সীমাহীন স্বেচ্ছাচারিত, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের গণশুনাণি অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) অফিস কক্ষে এসব অভিযোগের গণশুনাণি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এম এম আরাফাত হোসেন।

এ সময়  ওই অফিসারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের অকাট্ট্য প্রমাণসহ অর্ধশতাধিক সাংস্কৃতিকমনা মানুষ লিখিত ও মৌখিকভাবে স্ব শরীরে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য প্রদান করেন। যারা সাক্ষ্য প্রমাণ দাখিল করেছেন তারা হলেন, জেলা শিল্পকলা একাডেমির আজীবন সদস্যবৃন্দ, একাডেমির শিক্ষার্থীরা, অভিভাবকবৃন্দ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কর্মী ও সাংবাদিকবৃন্দ।

অভিযোগ শুনানি শেষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এম এম আরাফাত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, জেলা কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমানের বিরুদ্ধে সীমাহীন স্বেচ্ছারিতা, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ লিখিত ও মৌখিকভাবে শুনেছি। আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে জানাতে পারবো এ তদন্তের ফলাফল।

নড়াইল জেলা কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমানের নিকট তার স্বেচ্ছারিতা, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ কাল্পনিক, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমি প্রমাণ করবো আমি নির্দোষ, একটু অপেক্ষা করেন।

এ সময় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ও উপস্থিত সাক্ষী দিতে আসা সকল সাংস্কৃতিক কর্মীরা ওই জেলা কালচারাল কর্মকর্তার দ্রুত অপসারণের দাবী জানান।

জানাগেছে, সম্প্রতি নড়াইল জেলা কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমানের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে খবর প্রকাশ করায় ওই কালচারাল অফিসার সাংবাদিক এসকে সুজয়ের নামে ৫০ লাখ টাকার মানহানি মামলা দায়ের করেন। যার প্রেক্ষিতে আজ রোববার বেলা ১১টায় নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এম এম আরাফাত হোসেন জেলা কালচারাল অফিসারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সমূহ গণশুনানির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।    

উল্লেখ, জেলা কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, নড়াইলে অনুষ্ঠিত গণজাগরণের সাংস্কৃতিক উৎসব উপলক্ষে দুই লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। গত ৩ ডিসেম্বর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে এ অনুষ্ঠানে একটিমাত্র সাংস্কৃতিক সংগঠনকে দুই হাজার টাকা দেয়া হয়। বাকি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর আগেও অন্য অনুষ্ঠানগুলোর টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া শিল্পকলা একাডেমিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে তিনি অসদাচরণ করেন।

জানাগেছে, এই কালচারাল অফিসার হামদুর রহমানের বিরুদ্ধে দেড় বছর আগে ময়মনসিংহ জেলা কালচারাল অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায়ও ব্যাপক দুর্নীতির কারনে তাকে প্রত্যাহার করে ঢাকায় বদলি করা হয়। এ নিয়েও বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।

এ বছরের জানুয়ারিতে নড়াইলে যোগদানের পর আবারও হামিদুর রহমানের বিরুদ্ধে সীমাহীন স্বেচ্ছারিতা, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠে। নড়াইল থেকেও তাকে প্রত্যাহার দাবি করেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা।

অভিযোগ রয়েছে, জেলা শিল্পকলা অডিটোরিয়ামের সাউন্ড, ইলেকট্রিক ও ভবন সংস্কারের কথা বলে সাউন্ড এবং ইলেকট্রিকের কাজ খাতা-কলমে টেন্ডার দেখিয়ে মূলত হামিদুর রহমান নিজেই সেই কাজ করেছেন।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাউন্ড এবং ইলেকট্রনিক্স ও ডেকোরেশন ব্যবসায়ী জানান, তারা অডিটোরিয়ামের কাজ না করলেও তাদের কাছ থেকে জেলা কালচারাল অফিসার ফাঁকা ভাউচার নিয়ে গেছেন।

শিল্পকলা একাডেমির সাবেক অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর শিমুল শেখ বলেন, গত জুলাই মাসে নড়াইলে চাকরিকালীন সময়ে জেলা কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমানের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় আমার কাছ থেকে ছয়টি কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে রাখেন। এরপর এবছরের আগস্ট মাসে আমাকে পথের কাঁটা ভেবে মেহেরপুরে বদলি করেন।