নড়াইলে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি, বোমা বিস্ফোরণ ও হামলার নেতৃত্ব দেয়া মামলায় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোসকে বিস্ফোরক দ্রব্য পেনাল কোডের ধারায় জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে নড়াইলে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. হাদিউজ্জামান এ আদেশ দেন।
গত ৫ নভেম্বর সুবাস বোস হাইকোর্টে এ মামলায় আগাম জামিন চাইলে আদালত তাকে জামিন না দিয়ে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির হতে আদেশ দেন। সে আদেশ মোতাবেক তিনি আজ বৃহস্পতিবার নড়াইল বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিকে সুবাস চন্দ্র বোসের আদালতে হাজিরার খবর পেয়ে বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা-কর্মীরা ভিড় করে। বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা আসামি চন্দ্র বোসকে হাতকড়া পরিয়ে একজন অপরাধীর ন্যায় আদালত হতে কারাগারে নেওয়ার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেন।
নড়াইল জজ কোর্টের পিপি এ্যাডভোকেট আব্দুল হক বলেন, গত ৪ আগস্ট নড়াইলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলার আসামি সুবাস চন্দ্র বোস চীফ জুডিসিয়াল আদালতে হাজিরা দিলে বিজ্ঞ আদালতের বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোস নানাভাবে বিএনপি নেতা-কর্মীদের অত্যাচার নির্যাতন করেছেন। তিনি প্রকাশ্যে মিছিলে নেতৃত্ব দিয়ে বৈষম্যবিরোধি আন্দোলনে হামলা করিয়েছেন। তার জামিন নামঞ্জুর হয়েছে। এতে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, প্রচলিত আইনে তার বিচার প্রক্রিয়া শেষ হবে।’
নড়াইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস আদালতে হাজিরা দেওয়ার কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে আদালত চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, নড়াইল সদর উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সদস্য সচিব ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুর রহমান পলাশ নড়াইল সদর থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইলের মিছিলে গুলি, বোমা বিস্ফোরণ ও মারধর করার অভিযোগ এনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, তাঁর বাবা গোলাম মোর্ত্তজা স্বপনসহ ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলায় জেলা আওয়ামীলোগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোসকে ৩ নম্বর আসামী করা হয়।
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির জামিন না মঞ্জুরের খবরে আদালত চত্বরে জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়। পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় দুপুর ২টার দিক অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোসকে আদালত থেকে পুলিশ পিকাপে জেল হাজতে নেয়া হয়।