• 11 May, 2024

ঘিওরে জামাই মেলা

ঘিওরে জামাই মেলা

ঘিওরে শুরু হয়েছে প্রায় ৩০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলা। রবিবার উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের বাঙ্গালা স্কুল মাঠে মেলা শুরু হয়েছে, যা গতকাল সোমবার শেষ হয়েছে। দোলপূর্ণিমা উপলক্ষে প্রতি বছর এখানে এ মেলা বসে। জামাই মেলা ছাড়াও এটি স্থানীয়ভাবে বউমেলা, বাঙ্গালা মেলা, দোল মেলা ও মাছের মেলা নামে পরিচিত।

স্থানীয় বাঙ্গালা মুক্তা সংঘের আয়োজনে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলার সময় পুরো ইউনিয়নের মেয়ে আর জামাইকে দাওয়াত করে আনা হয়। তারপর মেলা থেকে জামাইরা বড় বড় মাছ, হরেক রকম মিষ্টি, পান-সুপারি কিনে শ্বশুরবাড়ি যান। এরপর মেয়ে জামাইদের শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে দেওয়া হয় বিভিন্ন আকর্ষণীয় বিভিন্ন পুরস্কার, যেমন গরু, মহিষ, আসবাবপত্র, স্বর্ণালংকার, জামা-কাপড় ইত্যাদি। মেলার সমাপনী দিনকে বলে বউমেলা। এদিন কেবল বিভিন্ন গ্রামের নববধূরা এবং স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসা মেয়েরা তাদের স্বামীদের সঙ্গে মেলায় আসেন।

মেলার অন্যতম আকর্ষণ মানুষদৌড়, ঘোড়দৌড়, সাইকেল চালানো প্রতিযোগিতাসহ নানা ক্রীড়া। বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিযোগিতার জন্য এই মেলায় ঘোড়া আসে। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের দেওয়া হয় পুরস্কার।

মাছ গলিতে দেখা যায়,  পাঁচ থেকে ৩০ কেজি ওজনের মাছের সমারোহ। অর্ধশত জেলে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ডালায় সাজিয়ে বসেন। মেলায় মাছ ছাড়াও আসবাবপত্র, বাঁশ-বেতের আসবাবপত্র, লৌহজাত দ্রব্য, ফলমূল, নানা ধরনের মিষ্টি, বিন্নিখৈ, পানসুপারি, মৃৎশিল্প দোকানে ছিল উপচে পড়া ভিড়।  সাবেক ইউপি সদস্য চাঁন মিয়া বলেন, ‘আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছে ১৫ বছর আগে। প্রতি বছর এই মেলায় মেয়ে ও জামাতাকে দাওয়াত দিয়ে আনি, তাদের উপঢৌকন দিই। এ বছর জামাতার জন্য একটি গরু কিনেছি উপহার দেওয়ার জন্য। এলাকার যার যার সাধ্যমতো জামাতাদের উপহার দিয়ে থাকেন। এটিই আমাদের ঐতিহ্য।’

 

মেলা পরিচালনা কমিটির পরিচালক মো. কাউসার বলেন, এটি কেবল একটি মেলা নয়, সুদীর্ঘ ইতিহাস। মানুষের মিলনমেলা। পূর্বপুরুষদের দীর্ঘদিনের এই রীতি ধরে রাখতে পেরে বাঙ্গালা গ্রামবাসী গর্বিত। এ মেলা কবে থেকে শুরু হয়েছে, তার সঠিক দিনক্ষণ জানা যায়নি। বিভিন্ন সূত্রমতে জানা যায়, বাঙ্গালার মেলাটি ৩০০ বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসছে।