স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে সাহস ও আত্মত্যাগের নিদর্শন স্থাপনের জন্য বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি পান বাংলার সাত বীর। এরমধ্যে অন্যতম একজন হলেন নূর মোহাম্মদ শেখ। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর এ বীরের ৫১তম শাহাদতবার্ষিকী। এ দিনে যশোর জেলার গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন রণাঙ্গনের লড়াকু এ সৈনিক। সৈনিক জীবনের কর্তব্যবোধ থেকে বিচ্যুত না হয়ে জীবনের শেষমুহূর্ত পর্যন্ত অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সহযোদ্ধাদের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে গেছেন নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে। তার সেই চেষ্টা সার্থক হয়েছিল। নিরাপদে ফিরতে পেরেছিলেন সহযোদ্ধারা। শুধু ফিরে আসেননি নূর মোহাম্মদ। শত্রুপক্ষের মর্টারের গোলা কেড়ে নিয়েছিল তার জীবন। পরে জঙ্গলের মধ্যে পাওয়া যায় এ বীরশ্রেষ্ঠের নিস্তেজ দেহ। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী উপড়ে ফেলেছিল তার দু’টি চোখ। দেহকে ছিন্নভিন্ন করেছিল।’
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৫১তম শাহাদতবার্ষিকী স্মরণীয় করে রাখতে এবছর ব্যতিক্রমি কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সাড়ে ১১টায় এ উপলক্ষে ‘বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ ট্রাস্ট’ জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে এক প্রস্তুতি সভা আয়োজন করে।
সভায় ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ এঁর শাহাদতবার্ষিকী পালন উপলক্ষে কর্মসূচির ওপর বিস্তারিত আলোচনা উপস্থাপন করেন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সচিব ও চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান ভূঁইয়া।
সভা সূত্রে জানাযায়, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৫১তম শাহাদতবার্ষিকী পালন উপলক্ষে-গৃহিত ব্যতিক্রমি কর্মসূচির মধ্যে থাকছে, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ‘জীবনী ও কর্মের’ ওপর নূর মোহাম্মদ নগরে জেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে কুইজ প্রতিযোগিতা, জেলা শিল্পকলা একাডেমি একই থীমের ওপর কলেজ পর্যায় কুইজ, কবিতা, রচনা ও সংগীত প্রতিযোগিতা, জেলা শিক্ষা অফিসার ও জেলা প্রাথমিক অফিসারের নেতৃত্বে জেলার সকল প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায় আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠান।
এছাড়া প্রতিবারের ন্যায় এবছরে কর্মসূচিব মধ্যে থাকছে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ নগরে কোরআন খানি, স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ, পুলিশের সশস্ত্র সালাম এবং দোয়া মাহফিল।
এসময় সভায় মতামত রাখেন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফকরুল হাসান, জেলা শিল্পকলা একাডেমির জেলা কালচারাল অফিসার হায়দার আলী, বীরমুক্তিযোদ্ধা মোল্যা কওছার উদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ইউনুচ মোল্যা, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরদার আব্দুল মজিদ প্রমুখ।