ইন্টারনেট সেবায় ভোক্তাধিকার লঙ্ঘন!–আপণ

66

আজ মহান মে দিবস। মহামারিতে শ্রমিকের দুর্দিন। ইন্টারনেট সেবার মাধ্যমে শ্রমদিয়ে টাকা আয়ের জন্য সংগ্রাম করে চলেছে দেশের অনেক তরুণ-তরুণি।

বিভিন্ন সূত্রে থেকে জানা গেছে, ইন্টারনেট সেবা না দিয়ে বছরে এক একজন গ্রাহক থেকে কমপক্ষে দুই হাজার টাকার উর্দ্ধে হাতিয়ে নিচ্ছে ইন্টারনেট সেবাদানকারি প্রতিষ্ঠান সমূহ।

বর্তমান এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের ইন্টারনেট সেবা নিয়ে অনেকেই কাজ করছে দীর্ঘদিন ধরে।
গতবছর ০৩ জুলাই’২০ নড়াইলকণ্ঠ.ডকম অফিসের পক্ষ থেকে কার্নিভাল ইন্টারনেট সার্ভিসের মান অসন্তোষের অভিযোগ করা হয়েছিল। একই সাথে ভোক্তাধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়েছিল।

এরপরেও প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিতভাবে প্রত্যেক মাসে কমপক্ষে ৭/৮দিন ইন্টারনেট সেবা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বন্ধ রাখিয়ে প্রতিষ্ঠানটি আমাদের মতো একজন গ্রাহকদের ঠকিয়ে অধিক মুনাফার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এর কোন আইনি প্রতিকার পাচ্ছি না।

আমাদের হিসাব মতে গত জুলাই ২০২০ হতে ১ মে ২০২১ পর্যন্ত প্রায় ২ মাস উর্দ্ধ সময়কাল কার্নিভাল ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানটি নিরবাচ্ছিন্ন ইনটারনেট সেবা না দিয়ে পুরা মাসের টাকা গ্রহণ করে যাচ্ছে।

৩০ এপ্রিল ২০২১ থেকে ১ মে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ঔপ্রতিষ্ঠানের কোন সেবা পাইনি। কোন সমস্যা হলে স্থানীয়ভাবে যোগাযোগ করলে বেশিরভাগ সময় ফোন রিসিভ করেন না। রিসিভ করলেও এই দেখতেছি। এই কোম্পানীর নিকট গ্রাহক হিসেবে জিম্মি হয়ে পড়েছি।

মাঝে মধ্যে কার্নিভাল ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানটি আমাদের মোবাইল ফোনে একটি বায়ুবিয় মেসে দিয়ে বলেন- সাময়িক ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন থাকায় আমরা দু:খিত। ওনার সফটওয়ার দু:খ প্রকাশ করেই খ্যান্ত! এদিকে আমাদের পকেট থেকে মাসের ৪ তারিখের মধ্যেই ঠিকই ষোলআনা টাকাই হাতিয়ে নিচ্ছেন।

কার্নিভাল ইন্টারনেট মালিককের নিকট একটি প্রশ্ন? নেট সেবা না দিয়ে মাস গেলেই গ্রাহকদের নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন, এবার আমরা গ্রাহকরা যদি বলি ভাই কার্নিভাল আমার পকেটে তো এইমূহুর্তে কোন টাকা নাই, এছাড়া আপনার নেট সেবা নিয়মিত নয়, ফাঁকিবাজি বন্ধ করুন, সঙ্গত কারনে এ মাসের টাকা দিতে পারচ্ছি না বলে আমরা দু:খিত। আপনি আমাদের সংযোগ বন্ধ করে দিবেন। আমরা মালিকদের চরিত্র জানি। বর্তমান দেখছেন না দেশের এক মালিকের ছেলেকে নিয়ে কি চলচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা রীতিমত অমানবিক, ভোক্তাধিকার লঙ্ঘনের সামিল। ভোক্তরা সকলে সোচ্চার হোন, যে কোন সেবা গ্রহণের আগে যথাযথ আইনি বিষয়টি বুঝে নিন। বুঝে নেয়া আপনার আমার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে আমার ন্যায্য অধিকার।

এদিকে খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা যায়, কার্নিভাল ইন্টারনেট প্রতিষ্টানের টাকার রশিদের ঠিকানা হিসেবে রয়েছে: ‘হাইওয়ে হোমস (২য় তলা), ক-৩২/৬, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা-১২১’ এবং ওয়েবসাইটে প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে- ‘উদয় টাওয়ার, লেভেল ১২, ৫৭ এন্ড ৫৭/এ, গুলশান এভিনিউ, ঢাকা-১২১২। এটা সম্পর্কে গ্রাহক, দায়িত্বশীল ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের নজর দেয়া উচিৎ বলে আমরা মনে করি।

কার্নিভাল ইন্টারনেটসহ অন্যান্য ইন্টারনেট সেবা গ্রহণকারিরা একটু ভাবুন কিভাবে আমাদের সাথে বন্ধুত্ব করা হচ্ছে। কথায় আছে না ফোটে ফোটে পড়ে কলসে মানাই না। ইন্টারনেট সেবা না দিয়ে যদি প্রতিবছর এভাবে প্রতি গ্রাহক থেকে প্রায় ২০০০ (দুই হাজার) টাকা করে প্রতিষ্ঠানটি হাতিয়ে নেয় তাহেলে আপনার জেলায় আপনি হিসাব করেন কত যাচ্ছে মালিকের পকেটে।

বিষয়টি জাতীয় ভোক্তাধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, ইন্টারনেট একটি প্রতিশ্রুতি সেবা, যে সেবার বিনিময়ে গ্রাহক মৌখিক কথায় টাকা দিয়ে যাচ্ছে। এখানেও গ্রাহককে ট্রাপ করে কৌশলে ফাঁকি দেয়া হচ্ছে।

এছাড়া দেশে এ ধরনের অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে তারাও একইভাবে সেবা গ্রহিতাদের ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আশা করি সরকার এ বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।